বাংলাদেশ অনলাইন : | মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
ময়মনসিংহে নারী নেত্রীর বিরুদ্ধে জিম্মি করে আপত্তিকর ভিডিওধারণ, মারধর ও পরে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন আরেক নারী নেত্রী। ৬ মে (সোমবার) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপ্না খন্দকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা শাখার সদস্য মোছা. রানী মালা। এ ঘটনায় স্বপ্না খন্দকারসহ ছয়জনকে আসামি করে সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলাও করেছেন রানী। জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক স্বপ্না খন্দকারের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন রানী। রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই রানী লোকজন নিয়ে স্বপ্না খন্দকারের আয়োজনে যুক্ত হন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পূর্ব পরিচিত হওয়ার সুবাদে অন্তত দুই বছর আগে ময়মনসিংহ নগরীতে স্বপ্না খন্দকারের একটি বাসায় দাওয়াত খাওয়ানো শেষে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে একজন লোকের সঙ্গে বসিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ওই পুরুষের কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নেয়। একই সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি নিয়ে বিভিন্ন সময় নগদ টাকাও নেয়। বিষয়টি জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ককে জানানোর কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন রানী।
ওই অবস্থায় বিচার চেয়ে গত ২ মে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা করেছেন রানী। এতে স্বপ্না খন্দকার, তার সহযোগী কাজী বাবু, হীরা, মশিউর রহমান রানাসহ ৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রানী মালা বলেন, আমি স্বপ্না খন্দকারের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার শিকার। আমার মতো আরও অনেক নারীই স্বপ্নার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। কিন্তু ভয়ে কেউ স্বপ্নার বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। আমি চাই না আর কোনো নারী এই ধরনের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হোক। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির আঁড়ালে স্বপ্না খন্দকার এই ধরনের অপরাধ করে আসছে। মূলত রাজনীতির আড়ালে এই ধরনের অপরাধের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকজনকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার পেশা ও নেশা। এভাবেই সে এই নগরীতে গড়ে তুলেছেন বেশ কয়েকটি বাড়ি, গাড়ি ও ব্যাংক ব্যালেন্স। তিনি আরও বলেন, এই সংবাদ সম্মেলনের পর আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কাবোধ করছি। তবুও আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বপ্নার সকল অপরাধের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। সেইসঙ্গে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার
বিষয়টি নিয়ে স্বপ্না খন্দকার বলেন, আমার বাসায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেখানে দেখা গেছে পুরুষকে নিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ঢুকেছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। মেয়েটা আমার বাসায় ভাড়া থাকতো। সেখানে প্রতিনিয়ত পুরুষ নিয়ে যেত। আমি বিষয়টি জানতাম না। যখন আমি জানলাম তখন মাইর দিয়ে তাকে বের করে দিয়েছিলাম।
তবে দুই বছরেও এ ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন, এমন প্রশ্ন করলে স্বপ্না খন্দকার বলেন, এরপর কয়েকটি নির্বাচনী ব্যস্ততার কারণে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি বিলকিস খানম পাপড়ি বলেন, ঘটনাটি ওই সময়ই রানী আমাকে জানিয়েছিল। পরে আমি কেন্দ্রকে অবহিত করেছি। মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডেইজি সারোয়ার বলেন, এসব ব্যাপারে প্রমাণ সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষী যে-ই হোক কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
Posted ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh